স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি
স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীকে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আসামী খুঁজতে গিয়ে আসামীর ৭০ বছরের বৃদ্ধা মা’কে পুলিশের উপস্থিতিতে বাদী পক্ষের লোকজন মানসিক ও শারিরীক ভাবে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ করেন নিহত আহেদা বেগমের স্বজনরা।
মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) দুপুর ২টায় হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার বহরা ইউনিয়নের বহরা পশ্চিমপাড়া গ্রামে নিহত বৃদ্ধা মহিলার নিজ বাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটেছে।
নিহত আহেদা বেগমের স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, গত ২৬ জুন মোঃ জয়নাল মিয়া-(৪৬) তার স্ত্রীর চিকিৎসার খরচের জন্য তাঁহার বাবা ও ভাইদের কাছে কিছু পাওয়ানা টাকা চাহিলে তাকে টাকা না দিয়ে বকাঝকা করে তাড়িয়ে দেয়। সেই অপমান সইতে না পেরে পরের দিন সকালে বাড়ির পাশের একটি পেঁয়ারা গাছের সাথে জয়নাল মিয়ার ঝুলন্ত লাশ দেখেন প্রতিবেশীরা। জয়নাল মিয়ার আত্মহত্যার জন্য তাঁর স্ত্রী হেলেনা বেগমকে দায়ী করে একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের পরিবার। হত্যা মামলার মিথ্যা অভিযোগে তারা স্ব-পরিবারে এলাকা ছাড়া হওয়ায় তাঁদের খুঁজতে আসামী হেলানা বেগমের মা’র বাড়িতে গিয়ে তাকে একা পেয়ে হুমকিধামকি প্রদান করে গলায় ওড়না ধরে টেনে-হিঁচড়ে বাহির করতে চাইলে ঘটনাস্থলে জ্ঞান হারিয়ে মাঠিতে পরে যান। তখন তাকে আশেপাশের লোকজন হাসপাতালে নিলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
তারা আরো বলেন নিহত জয়নাল মিয়া দীর্ঘ ২৫ বছর বিদেশে থাকার সময় তাঁর বাবা ও ভাইদের কাছে উপার্জিত সব টাকা দিয়ে দেশে আসছে। সেই টাকার তেমন কোন বুঝ না পাওয়ায় তাদের সাথে মনমালিন্য সৃষ্টি হয় জয়নালের। এসময় তাকে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করে তার জায়গা সম্পত্তি আত্মসাৎ করার চেষ্টা করেন।
স্বজনদের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন বহরা পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল কাদির এর ছেলে আব্দুল জাহের (৭০), আব্দুল জাহের এর ছেলে নাহিদ মিয়া (৩২) ও শাহীন মিয়া (৩৭), মৃত মতিউর রহমান এর ছেলে ফরিদ মিয়া (৫৫), ফরিদ মিয়ার ছেলে মাসুদ মিয়া (৩৫) সহ তাদের সহযোগীরা।
নিহত জয়নাল মিয়ার মেয়ে মোছাঃ রুমা বেগম ও ছেলে মোঃ আলী মিয়া বলেন, আমাদের জায়গা সম্পত্তি আত্মসাৎ করতে আমাদের বাবাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করে মা’কে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের পরিবারটি ধ্বংস করা ও আমাদের নানীকে হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি। পাশাপাশি তাদের পরিবারটিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য প্রশাসন ও সচেতন মহলের কাছে আকুতি জানান তারা।
বহরা ইউনিয়নের ৪ নং ওয়াডের বর্তমান মেম্বার মোঃ শাহজাহান মিয়া বলেন, আমি পরিষদে ছিলাম জরুরী ফোন পেয়ে অটোরিকশা নিয়ে এসে দেখি বৃদ্ধা মহিলাকে সবাই ঘর থেকে অচেতন অবস্থায় বের করছে। এসময় পুলিশ, সাবেক মেম্বার ফরিদ মিয়াসহ আশেপাশের লোকজন উপস্থিত ছিল। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মাধবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গত ২৬ জুন পেঁয়ারা গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করি। পরে ঐ ব্যক্তির বাবা কোর্টে একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন অফিসারবৃন্দ সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে বৃদ্ধা মহিলা ঘর থেকে বের হয়ে এসে আবার ঘরে যাওয়ার সময় অসচেতন হয়ে পরে যায়। তখন উপস্থিত সবাই তাকে মেডিকেল নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply